দুধসর বা মনসা গাছ

 সম্প্রতি একজন কৃষি বিজ্ঞানী গবেষণা করে দেখেছেন দুধসর গাছের পাতার রস কোভিড-১৯ থেকে দ্রুত সেরে ওঠতে সাহায্য করে (বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বলেছেন বিজ্ঞান ভিত্তিক গবেষণা হলে নিশ্চিত হওয়া যাবে)। গত পরশু এ নিয়ে একটি টিভি চ্যানেলের সংবাদের ভিডিও পোস্ট করার পর কেউ কেউ এর ঔষধি গুণ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। আমিও আগে ভাবতাম ক্যাকটাস জাতীয় গাছে সাদা কষ মানেই বিষাক্ত। পরে এই ধারণা পরিবর্তন হয়েছে। এই পোস্টে দুধসর গাছ নিয়ে একটু বিস্তারিত আলোচনা করব।

বহু আগে থেকেই এই গাছের পাতা ঔষধ হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে (তবে এর ঔষধি গুণের প্রচলন খুব কম), অনেকেই এই গাছ সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য রোপণ করে থাকে, আবার অনেকে জ্বীন পরীর উপদ্রব থেকে রক্ষা পেতে বাড়ির চারকোনায় লাগিয়ে থাকে।

পরিচিতি : বাংলায় এর নাম দুধসর, সেন্দ মনসা, মনসা, সেহুন্দ মনসা। এর বৈজ্ঞানিক নাম: Euphorbia neriifolia। গাছ বেশি উঁচু ও ডালপালাযুক্ত হয় না। এ গাছের গায়ে ও ডালে ছোট ছোট অসংখ্য কাঁটা হয়। যে মনসা গাছে বেশি ঘন কাঁটা থাকে সে গাছের আঠাই বেশি ভেষজ গুণ সম্পন্ন হয়।

এ গাছ কাটলে বা এর পাতা কাটলে বা এর পাতা ভাঙলে দুধের মতো সাদা আঠা বেরুতে থাকে। শিগিগিরই আঠা শুকিয়ে যায়। গাছে বসন্তকালে হলুদ রঙের ছোট ছোট ফুল হয়। আবার এ বসন্ত ঋতুর শুরুতেই গাছে ছুরি বা কাটারি দিয়ে আঘাত করে তরুক্ষরি সংগ্রহ করা হয়।


ওষুধী ব্যবহার–
১) হুপিং কাশি হলে মনসার পাতা আগুনে সেঁকে চেপে রস বের করে চিনি মিশিয়ে খেলে কয়েকদিনের মধ্যে কাঁশি সেরে যায়।
২) বাতরোগে মনসার পাতাকে আগুনে ঝলসে নিযে তার রস দু-চার ফোঁটা অল্প দুধে মিশিয়ে দুই বেলা খেলে উপকার পাওয়া যায়।
৩) অর্শ রোগে মনসা গাছের গোড়ার অংশ টুকরো টুকরো করে কেটে পুড়িয়ে মনসার আঠা সহযোগে পুনরায় পুড়িয়ে মলম তৈরি করে লাগালে রোগ উপশম হয়।
৪) মনসার পাতার কাজল তৈরি করে তা শিশুদের চোখে লাগালে চোখে পিচুই পড়া বন্ধ হয়।
৫) মনসার আঠা দিয়ে এক রকম আয়ুর্বেদীয় তেল তৈরি করা হয়।
৬) মনসার আঠা অল্প নারকেল তেল সহযোগে সেদ্ধ করে নিতে হবে যতক্ষণ না চটচটে ভাব হচ্ছে। পরে সেটাকে শিশিতে ভরে রেখে দিতে হবে। এই তেল ‘এলোপেসিয়া এরিয়েটা’ নামক বিক্ষিপ্ত টাকে একদিন অন্তর লাগালে চুল গজায়।
রেফারেন্স:
তথ্য ও ছবি সংগৃহীত।
লেখা: মিজানুর রহমান শাওন


দুধসর বা মনসা গাছ দুধসর বা মনসা গাছ Reviewed by রেজওয়ান on 8:53 AM Rating: 5

No comments:

Powered by Blogger.