গোলাপ জাম

গোলাপ ফুলের সুঘ্রানযুক্ত গোলাপজাম ফল দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি সুস্বাদু ও রসালো। গাছ লাগানোর ৪-৫ বছর পর থেকেই প্রতি বছরই গাছটিতে ফল ধরে। বৈজ্ঞা‌নিক নাম Syzygium jambos.ইংরেজিতে Malabar plum, Rose apple ,Gulab jamun ইত্যা‌দি। গোলাপজাম বাংলাদেশের একটি পরিচিত ফল। হালকা মিষ্টি এই ফলটি বেশ সুস্বাদু। বিদেশি অনেক নামি দামী ফলের তুলনায় এটি একটি অনন্য বৈশিষ্ট্যমন্ডিত। একসময় বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে প্রচুর দেখা গেলেও এখন অনেক অঞ্চল থেকে প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে।

এটি মূলত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ফলগাছ। আদি নিবাস মালয়েশিয়া। সেখান থেকে ভারতীয় উপমাহাদেশে আসে। এখন বাংলাদেশ, ভারত, ফিলিপিন, চীন, ভিয়েতনাম প্রভৃতি দেশে দেখা যায়। এ গাছ দীর্ঘদিন বাঁচে এবং ফল দান করে। গোলাপজামের ফুলও খুবই দৃষ্টিনন্দন। ফুল উভলিঙ্গিক, অধোগর্ভ, পুষ্পদণ্ড লম্বা। ফল ফিকে হলুদ বা গোলাপি আভাযুক্ত হালকা সবুজ বর্ণের হয়ে থাকে। ফলের আকৃতি প্রায় গোলাকার কিংবা ডিম্বাকার। গাছ মাঝারী আকৃতির।

বীজ এবং কলমের মাধ্যমে বংশ বিস্তার করা যায়। গাছ লাগানোর ২/৩ বছর পর থেকেই ফল সংগ্রহ করা যায়। গোলাপজাম গাছে মাঘ থেকে চৈত্র মাসে ফুল আসে এবং বৈশাখ থেকে শ্রাবণ মাসের মধ্যে ফল পাকে। দেশের অনেক স্থানে বড় বড় নার্সারিতে চারা পাওয়া যায়। 

গোলাপজাম ফল কাঁচা অবস্থায় সবুজ থাকে। পাকতে শুরু করলে ধবধবে সাদা অথবা হলদে-সাদা হয়। কাঁচা ফল খেতে কষ্টা হলেও পাকা ফল হালকা মিষ্টি, নরম ও কচকচে। গোলাপজাম ফলে অনেক ধরণের পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান। নিম্নে গোলাপজাম (Rose-apples), পুষ্টি মান দেয়া হলো:

প্রতি ১০০ গ্রাম (৩.৫ আউন্স) পাকা তাজা গোলাপজামের পুষ্টিগত মান-
খাদ্য শক্তি ১০৫ কিজু (২৫ kcal)
শর্করা 5.7 g
স্নেহ পদার্থ 0.3 g
প্রোটিন 0.6 g
ভিটামিনসমূহ
--------------------
ভিটামিন এ সমতুল্য 17 μg
থায়ামিন (বি১) 0.02 mg
রিবোফ্লাভিন (বি২) 0.03 mg
ন্যায়াসেন (বি৪) 0.8 mg
ভিটামিন সি 22.3 mg
ধাতব সমুহ
----------------
ক্যালসিয়াম 29 mg
লৌহ 0.07 mg
ম্যাগনেসিয়াম 5 mg
ম্যাঙ্গানিজ 0.029 mg
ফসফরাস 8 mg
পটাশিয়াম 123 mg
দস্তা 0.06 mg

----------------------------------------------------
মো. আলী আশরাফ খান
মহাব্যবস্থাপক (অবসরপ্রাপ্ত), বিসিক ।
গোলাপ জাম গোলাপ জাম Reviewed by রেজওয়ান on 6:16 AM Rating: 5

No comments:

Powered by Blogger.