কেয়া ফল বা হালা ফল

শুধুমাত্র স্ত্রী কেয়া ফুল গাছেই ফল দেখা যায়। আশ্বিন-কার্তিক মাসে গুচ্ছাকারে ফল হয়। এই ফলের গাত্র বেশ শক্ত হয়। দূর থেকে এই গুচ্ছ ফলকে আনারসের মতো মনে হয়। এর রঙও অনেকটা আনারসের মতো হয়ে থাকে। কেয়া ফল ১৫-১৮ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা। ফল লাল, কমলা, পীত বা ধুসর রঙেরও হয়। অনেকেই এই ফল খায়। তবে কেতকী ফল তিতা স্বাদের। কেয়া বা কেতকী ফলকে অনেক জায়গায় "হালা" ফলও বলা হয়। এই ফলের বৈজ্ঞানিক নাম Pandanus tectorius।

 

কেয়া পাতার রস বসন্ত, ব্রণ, কুষ্ঠ, ডায়াবেটিস রোধে কার্যকরী। ফুলের তেল পেট ব্যথা কমাতে সহায়তা করে। এ ছাড়াও কেয়ার কাণ্ড, পুষ্পদণ্ড, বীজ ও ঝুরি নানাবিধ ওষুধ তৈরির কাজে ব্যবহার করা হয়। বিষাক্ত পোকার কামড় ও মাথার খুশকি কমাতে কেয়া বেশ উপকারী।
 
কেয়া একটি সুগন্ধি উদ্ভিদ। নানান রান্নায় কেওড়া ফুলের জল ব্যবহৃত হয়ে থাকে। বাংলাদেশে বিরিয়ানি, তেহারী, পোলাও ইত্যাদি রান্না কেওড়ার জল ছাড়া সম্পূর্ণ হয় না। এই কেয়া ফুল থেকেই বাস্পীভবন প্রক্রিয়ায় তৈরি হয় কেওড়ার জল (pandanus flower water)। জীবাণুনাশক হিসেবেও এর ভূমিকা রয়েছে। হৃৎপিণ্ড ও যকৃতের জন্য উপকারী।
 
হালা ফল সাধারণত পূর্ব অস্ট্রেলিয়া ও প্যাসিফিক আইল্যান্ডস, ভারত ও আমাদের বাংলাদেশেও পাওয়া যায়। এটিকে প্রবালপ্রাচীরও বলা হয়। এটি স্থানীয়ভাবে খুবই জনপ্রিয় ঔষধ ও ফল হিসেবে পরিচিত। এটি পাকার পর হলুদ রং হলে খাওয়া যায়। এটা দুর্ভিক্ষের সময় একটি খাদ্য হিসাবে পলিনেশিয়ার সর্বত্র ব্যবহৃত হয়।
 
কাঁচা ফল রান্না করেও খাওয়া যায়।কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়ে ও মাথাব্যাথা কমাতে এটা বেশ উপকারী। কেয়া পাতা দিয়ে ঝুড়ি, মাদুর, ইত্যাদি তৈরী করা যায়। নৌকার পাল খাটানোতে যে দড়ি ব্যবহার করা হয় সেই দড়ি এর আঁশ থেকে তৈরী করা যায়। শুষ্ক ফাইবার পেইন্টিং এর জন্য ব্রাশ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। 
 
মো. আলী আশরাফ খান
মহাব্যবস্থাপক (অবসরপ্রাপ্ত), বিসিক
 
কেয়া ফল বা হালা ফল কেয়া ফল বা হালা ফল Reviewed by রেজওয়ান on 12:31 AM Rating: 5

No comments:

Powered by Blogger.