বউলাগোটা’র বৈজ্ঞানিক নাম cordia dichotoma। স্থানীয়ভাবে বোহাল, বোহারি, বওলা, বউলা, বহুবরা, বচ, গুন্ডা, বউলাগোটা, বহুবরা বা লারহোরা নামেও পরিচিত।
আঞ্চলিক নাম: বগলার আঠা, আঠা ফল, বল্লার গোটা, লাডা ফল, বহাল, বহারি, লারহরা, বহলা ইত্যাদি।
ইংরেজী নাম: fragrant manjack, snotty gobbles, cummingcordia, glue berry, anonang, pink pearl, bird lime tree ও Indian cherry
এরা মাঝারি আকৃতির পাতাঝরা বৃক্ষ, প্রায় ২০ মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে।
কা বাঁকানো, শাখা-প্রশাখা ঝুলন্ত, বাকল ছাইরঙ ধূসর বা বাদামি রঙের। পাতা
সরল, একান্তর, ডিম্বাকার, সুষ্পষ্ট শিরা, আকার-আয়তন পরিবর্তনশীল। কিনারা
অনেকটা ঢেউ খেলানো বা দাঁতানো। ফুল সাদা, অবৃন্তক, সুগন্ধি ও উভয়লিঙ্গ।
বৃতি ঘণ্টাকার, কুঁড়ি অবস্থায় গোলাকার, নিম্নাংশ ডিশের মতো, ৫ খণ্ডিত।
দলমণ্ডল সাদা বা হলুদাভ সাদা, নালিকাকার, ভেতরটা রোমশ।
পুংকেশর দলখণ্ডের সংখ্যার সমান। ফল ঝুলন্ত, ডিম্বাকার, হলুদ পরিপকস্ফ অবস্থায় ১-ডিম্বক বিশিষ্ট। বীজ ডিম্বাকার, চ্যাপ্টা, স্বচ্ছ আঠালো মিষ্ট মণ্ডের মধ্যে সনি্নবিষ্ট।
ফুল ফোটে ফেব্রুয়ারিতে, ফল পাকে মে-জুনের দিকে। ফল শিশু-কিশোরদের প্রিয়।
এ গাছ থেকে খাদ্য, বস্ত্র, ওষুধ ও কাঠ পাওয়া যায়। ফলের স্বচ্ছ আঠা পাখি শিকারে, ঘুড়ি তৈরিতে, বইয়ের মলাট লাগাতে কাজে লাগে। কোথাও কোথাও ফল ও বীজের শাঁস খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করা হয়। শাঁস চর্মরোগে কাজে লাগে। বাকল থেকে শতকরা ২০ ভাগ টেনিন পাওয়া যায়। বাকলের কস্ফাথ টনিক হিসেবে অজীর্ণ, উদরাময়, জ্বর ও পেটের অসুখে কার্যকর। কাঠ দিয়ে নৌকা, বন্দুকের কুঁদা, কৃষি যন্ত্রপাতি ও ছোটখাটো আসবাবপত্র হয়। ভারতের লোধা আদিবাসীরা মূলের ছাল লেই করে ফুসকুড়ি নিরসনে ব্যবহার করে।
এ গাছ আমাদের লোকালয় সংলগ্ন বাগান, বেলেমাটির অরণ্য ও উন্মুক্ত স্থানে আপনা-আপনিই জন্মে ও বেড়ে ওঠে। এদের আবাসস্থল দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশসহ অস্ট্রেলিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত।
No comments: