বাজারে দুই ধরনের দেশি জাম আছে-ক্ষুদি (ছোট) ও মহিষে (বড়) জাম। ক্ষুদি জাম বাংলাদেশের মৌসুমি ফল। দেখতে বেশ সুন্দর, খেতে কিছুটা কষ্টা ও রসালো। ক্ষুদি জাম হালকা টক ও মিষ্টি স্বাদের হয়ে থাকে। ফলটি ১ থেকে ১.৫ সেন্টিমিটার লম্বা, দেখতে খানিকটা আয়তাকার।
বাংলাদেশে পাকা ক্ষুদি জাম পাওয়া যায় শ্রাবণ মাসের ২য় সপ্তাহ থেকে শেষ অবধি। দেশে ব্যবসায়িক উদ্যোগে উন্নত জাতের জাম বা হাইব্রিড জামের চাষ তেমন হয় না। তাই বাজারে পাওয়া জামের সবটাই দেশি জাতের এবং বাড়ির আঙিনায় লাগানো গাছের। পুষ্টি ও ঔষধিগুণ সমৃদ্ধ ক্ষুদি জামের ফলন বেশি হয় পাবনা, নাটোর, কুষ্টিয়া, যশোর, রাজশাহী এবং গাজীপুরে। তা ছাড়া বাংলাদেশের প্রায় সব অঞ্চলেই অল্প কিছু উৎপাদন হয়।
পুষ্টিবিদদের তথ্য মতে, প্রতি ১০০ গ্রাম জামে শর্করা আছে প্রায় ১৫ দশমিক ৫৬ গ্রাম, পটাশিয়াম ৭৯ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ১৭ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেশিয়াম ১৫ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ১৯ মিলিগ্রাম, সোডিয়াম ১৪ গ্রাম। জামে রয়েছে আরও কিছু উপকারী পুষ্টি উপাদান।
ক্ষুদি জামের স্বাস্থ্য উপকারিতা:
১. রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।
ডায়াবেটিস প্রতিরোধে ও ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য জাম ফল খুবই উপকারী।
২. হাড়ের শক্তি বৃদ্ধি করে।
৩. ইনফেকশন দূর করে।
8. জন্ডিস ও অ্যানিমিয়া নিরাময় করে।
৫. ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে।
৬. দেহে ইমিউনিটি বৃদ্ধি করে।
৭. ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য ভালো।
জামের পাতা, ছাল এবং বীজ ডায়াবেটিস-এর জন্য সবচেয়ে উপকারি অংশ। এর মধ্যে জামের বীজ অ্যান্টি-ডায়াবেটিক প্রোপার্টিজ হিসেবে প্রমাণিত।
৮. হার্টের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখে।
সতর্কতা :
জাম পচনশীল হওয়ায় বাজারের জামে ফরমালিন দেওয়া থাকতে পারে। তাই জাম খাওয়ার আগে পানিতে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখাই ভালো। যাদের শরীরে পটাশিয়ামের পরিমাণ বেশি এবং কিডনির সমস্যা আছে তাঁদের জন্য জাম ঝুঁকিপূর্ণ। এ ছাড়া জামের আছে নানা ঔষধিগুণ ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা।
গ্রীষ্মকালীন অন্যান্য ফলগুলোর মতো জাম এতোটা জনপ্রিয় নয় কিন্তু এতে আছে প্রচুর ভিটামিন এবং পুষ্টি উপাদান যা দেহের বিভিন্ন চাহিদা পূরণ করার পাশাপাশি বিভিন্ন রোগ থেকে দেহকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। তাই আমাদের উচিত সহজলভ্য ও সুস্বাদু এই ফলটিকে অবহেলা না করে আমাদের খাদ্য তালিকায় এটি যোগ করা এবং বিলুপ্তির কবল থেকে এই উদ্ভিদকে রক্ষা করা।
ক্ষুদি জাম
Reviewed by রেজওয়ান
on
12:26 AM
Rating:
No comments: