সূর্যমুখী

সূর্যের নাম নিয়ে ফুলের নাম রাখা হয়েছে সূর্যমুখী। সে যেন সব সময় সূর্যের দিকে মুখ করেই রয়েছে। একেবারে ফোটা ফুলে দেখা না গেলেও শিষ কুঁড়িতে এটা নজরে আসে। সূর্যমুখী ফুলের কুঁড়ি ভোর না হতেই পূর্বদিকে তাকিয়ে থাকে। সূর্য ওঠার পরে সে সূর্যের আকাশপথের দিকে মুখ করে মুখটাকে উপরদিকে তোলে, ভরদুপুরে কুঁড়ি ঊর্ধ্বপানে চেয়ে থাকে। বিকালে কুঁড়ির মুখ আবার পশ্চিমদিকে। এভাবেই সারাদিন সূর্যের দিকে মুখ রেখে সূর্যমুখীর কুঁড়ি পূর্ব থেকে পশ্চিমে মুখ ঘুরিয়ে নেয়।
সূর্যমুখী অংঃবৎপবধব গোত্রের র্বষজীবী বা বহুর্বষজীবী তেলপ্রদায়ী উদ্ভিদ Helianthus annuus। কিনারে হলদু রশ্মি পুষিঙ্কাসহ মু-কমঞ্জুরি (head) ৩০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত চওড়া হয়। এর বীজ তেলপ্রদায়ী এবং হাঁস-মুরগির খাদ্য। বনস্পতি বা উদ্ভিজ্জ ঘি তৈরিতে বাদাম তেলের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার্য। ভোজ্যতেলের মধ্যে সূর্যমুখী তেল পুষ্টিমানে সর্বোত্তম, হৃদরোগীদের জন্য খুবই উপকারী। কারণ এই তেল রক্তে কোলেস্টেরল বাড়তে দেয় না। এই তেল প্রোটিন এবং ভিটামিন 'এ', 'ডি' ও 'ই' সমৃদ্ধ। খোসা ছড়ানো তেল গবাদিপশুর খাদ্য। ধারণা করা হয়, সূর্যমুখীর প্রথম আবাদ শুরু মেক্সিকোতে। বাংলাদেশে সূর্যমুখীর চাষ প্রথমে বাগানের বাহারী ফুল হিসেবে এবং পরে ১৯৮০'র দশকে উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলায় রবি ফসল হিসেবে এর চাষ শুরু হয়। হেক্টরপ্রতি বীজ উৎপাদন প্রায় ৭৬০ কেজি। ফসল পাকতে সময় লাগে ৯০-১০০ দিন। সূর্যমুখীকে নিয়ে গ্রিক পুরাণে আছে একটি গল্প। সূর্যদেবতা এপোলোকে ভালোবাসত ক্লাইটি নামের একটি মেয়ে। আট দিন ধরে সে শুধু এপোলোর রথ দেখত। আর এভাবে থাকতে থাকতে নবম দিনে সে পরিণত হয় সূর্যমুখীতে। লাল গোলাপ যেমন সমাজতন্ত্রের প্রতীক, ঠিক তেমনি সূর্যমুখী গ্রিন পলিটিক্সের প্রতীক।
সূর্যমুখী সূর্যমুখী Reviewed by রেজওয়ান on 8:29 AM Rating: 5

No comments:

Powered by Blogger.