অর্কিড

ফুল হিসেবে অকিডের সৌন্দর্য অন্যকিছুর সঙ্গে তুলনাই করা যায় না। কেননা ফোটা অবস্থায় এর আয়ু অন্য যে কোনো ফুলের চেয়ে বেশি। তাই ফুলপ্রেমী যে কোনো মানুষের প্রিয় ফুলের তালিকায় এর নামটি অনায়াসেই চলে আসে। আমরা সাধারণত দু'ধরনের অর্কিড দেখে থাকি_ এপিফাইটিক ও টেরেস্ট্রিয়াল অর্কিড। এপিফাইটিক অর্কিড বড় কোনো গাছকে আশ্রয় করে বেড়ে ওঠে। মাটিতে জন্মায় টেরেস্ট্রিয়াল অর্কিড, এর পরিচর্যা করা তুলনামূলকভাবে সহজ।
সমানভাবে পাতা পচা সার, পুরনো গোবর, সাধারণ মাটি, একটু মোটা দানার বালি ও ছোট ছোট কাঠ-কয়লা মিশিয়ে অর্কিডের জন্য মাটি তৈরি করতে হয়। টবে মাটি ভর্তি করার পর গোড়ায় বেশি ইটের টুকরা দিতে হয়, যাতে পানি না দাঁড়ায়। টবের ওপর অর্কিড গাছ এমনভাবে বসাতে হয় যাতে এর কোনো অংশ সার মাটির নিচে
থাকে না।
এপিফাইটিক অর্কিড অন্য কোনো বড় গাছকে আশ্রয় করে হয়। বড় গাছের ডালের ছাল সামান্য তুলে সেখানে অর্কিডের কোনো একটি ছোট অংশ নিয়ে লাগিয়ে বেঁধে দিতে হবে। এরপর নিয়মিত পরিচর্যা করলে অর্কিড হবে। আমাদের দেশে আম, কাঁঠাল ও বটগাছের
ডালে এমনিতেই অনেক সময় এক ধরনের অর্কিড জন্মাতে দেখা যায়। সাধারণত গ্রীষ্ম ও বর্ষা ঋতুতে অর্কিড বাড়ে আর শীতকালে বিশ্রাম নেয়।
টবের অর্কিডে গ্রীষ্মকালে দু'বার পানি দিলেই চলে আর বর্ষায় তার প্রয়োজন হয় না। শীতকালে দিতে হয় একবার। পানি পিচকারি দিয়ে দিলে ভালো হয়। পানি দেওয়ার সময় অবশ্যই পাতা ও গাছ ভালো করে ভিজিয়ে দিতে হবে। অর্কিড আর্দ্র অবহাওয়া পছন্দ করে। এর কাছাকাছি স্থান স্যাঁতসেঁতে কিংবা পানিভর্তি বড় টব থাকলে ভালো হয়। কারণ এমন স্থানে অর্কিড সহজেই তার প্রয়োজনীয় খাবার উৎপন্ন করতে পারে।
অর্কিডের রোগাক্রান্ত পাতা ও শেকড় পরিত্যক্ত অবস্থায় রাখা ঠিক নয়। এগুলো মাটিতে পুঁতে অথবা পুড়িয়ে ফেলা উচিত। অর্কিডে কালো ছাড়া যে কোনো রঙের ফুল হয়। বন জঙ্গল থেকে বিচিত্র রঙ ও রকমের অর্কিড সংগ্রহ করে শখের বাগান করা সম্ভব হয়। তাছাড়া ছোট-বড় নার্সারিতেও নানা রকম অর্কিড বিক্রি হয়।

হোসেন শহীদ মজনু
অর্কিড অর্কিড Reviewed by রেজওয়ান on 9:57 AM Rating: 5

No comments:

Powered by Blogger.