সারাবিশ্বে যত ধরনের ফল জন্মে, তার মধ্যে লেবু একটি। এটি অত্যন্ত পরিচিত একটি ফল। এ ফলটি সাইট্রাস লেমন নামেই বিশ্বজুড়ে পরিচিত। কারণ, এতে আছে প্রচুর পরিমাণে সাইট্রিক এসিড, যা হজমে সহায়ক। লেবুর রয়েছে নানা জাত। তবে সবার কাছে সবচেয়ে বেশি পরিচিত কাগজি, বাতাবি বা জাম্বুরা, মোসাম্বি, গন্ধরাজ এবং কমলা লেবু। সাইট্রিক এসিড ছাড়াও লেবুর ছাল ও খোসা থেকে পাওয়া যায় পেকটিন, যা সাধারণত জেলি তৈরিতে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। পুষ্টিবিজ্ঞানীদের মতে, লেবুজাতীয় ফলে রয়েছে গ্গ্নুকাসাইড বা তিতা জাতীয় পদার্থ। নানা জাতের লেবুর মধ্যে বাতাবি বা জাম্বুরাও অনেক জাতের হয়ে থাকে। কমলা দেখা যায় কয়েক ধরনের। তবে মিষ্টি কমলার কদরই সবচেয়ে বেশি। ফলে এটি বিক্রিও হয় চড়া দামে। টক কমলা জ্যাম-জেলি তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। এতেও রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পেকটিন। এ ছাড়া লেবুতে রয়েছে ভিটামিন এবং বিভিন্ন খাদ্য উপাদান। এ নিয়ে বিজ্ঞানীদের নানা গবেষণার ফলাফল অনুযায়ী, প্রতি ১শ' গ্রাম কাগজি লেবুতে ভিটামিন-সি'র পরিমাণ ৬২ মিলিগ্রাম, ভিটামিন-বি২ ০.০৩ মিলিগ্রাম, লৌহ ০.৩ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ৯০ মিলিগ্রাম এবং প্রোটিন ১.৫ গ্রাম।
খাদ্য উপাদান ও ভিটামিন ছাড়াও লেবুতে আছে এমন অনেক ভেষজ গুণ, যা মানবদেহের নানা রোগ-ব্যাধি নিরাময়ে কার্যকর ভূমিকা রাখে। ভারতীয় বনৌষধিতে উল্লেখ আছে, কোষ্ঠকাঠিন্য এবং জ্বরে শরীরকে সি্নগ্ধ করতে কমলার খোসা ব্যবহার করা ভালো। তাতে রোগী অনেকটা আরামবোধ করে। সর্দি, কাশি ও ঠাণ্ডাজনিত সমস্যায় লেবু অত্যন্ত কার্যকর। লেবু ও কমলার পাতার গন্ধে বমিভাব দূর হয়। পিত্ত বিকারজনিত বমনে বিষদোষ ও পিপাসা দূর করতে কাগজি লেবু অত্যন্ত সহায়ক। মাথার খুশকি নিবারণে লেবুর রয়েছে অসাধারণ ক্ষমতা। সুগন্ধি দ্রব্য তৈরিতেও কাগজি লেবু ব্যবহৃত হয়। প্রতিদিন খাবারের সঙ্গে লেবুরস খেলে মুখে রুচি আসে; রোগ প্রতিরোধেও সাহায্য করে। আমাদের ফলটির গুণ সম্পর্কে ধারণা না থাকলেও পাশ্চাত্যের দেশগুলোতে কিন্তু লেবু ছাড়া কোনো রান্নাই হয় না। ইউরোপীয় দেশগুলোতে রান্না-বান্নায় মূল উপাদান থাকেই তিনটি_ লেবুর রস, গোলমরিচ ও লবণ। নানা ধরনের রোগ-বালাই থেকে রক্ষা পেতে আসুন আমরা প্রতিদিন খাবারে লেবু রাখি।
-ঋতা আলম
লেবু
Reviewed by রেজওয়ান
on
5:40 AM
Rating:
No comments: