নাগলিঙ্গম

এ গাছটির গোড়ার দিকে প্রায় ১৮ ফুট এবং কাণ্ড ৩০ ফুট লম্বা। এর ফুল উজ্জ্বল গোলাপি, পাপড়ি গোলাকার কুলি্ল পাকানো, প্রস্ফুটিত ফুলের পরাগ কেশর অবিকল সাপের ফণার মতো, আর সে কারণেই উক্ত গাছের নাম নাগলিঙ্গম হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। নাগলিঙ্গম গাছের রয়েছে ব্যাপক ঔষধিগুণ। এর ফুলের কলি দিয়ে রস তৈরি করে খাওয়ালে প্রসূতি মায়ের সন্তান প্রসব সহজতর হয়।
এ গাছের ফুল বিষাক্ত সর্প প্রজাতি নাগ-নাগিনীর একান্ত সম্পদ। হাতির পেটের সমস্যার জন্য অত্যন্ত ফলদায়ক ঔষধি হিসেবে এ গাছের কচি পাতা খাওয়ানো হতো। আমাজান অঞ্চলের এ বৃক্ষকে এদেশের প্রতিকূল আবহাওয়ায় বাঁচে আছে।
গাছটির পাতা বর্শার ফলার মতো। গাঢ় সবুজ পাতায় গাছ ছেয়ে থাকে। হঠাৎ পাতা ঝরে গিয়ে পুরো গাছ পাতাশূন্য হয়ে পড়ে। আবার অল্পদিনের মধ্যেই সবুজ পাতায় ভরে ওঠে। হলদে সবুজ কলি থেকে ফোটা ফুলের রঙ বিচিত্র। ছয়টি লাল অথবা গোলাপি পাপড়ির মাঝখানে চ্যাপ্টা পরাগগুচ্ছ সাপের ফণার মতো বাঁকানো থাকে। পরাগগুচ্ছের নিচের অংশ সাদাটে, বাঁকানো অংশ গোলাপি এবং সবশেষ পরাগদানি হলুদ। ফুলের হালকা সুগন্ধে চারদিক মৌ-মৌ করে। ফল গোলাকার, আকারে বড়।

প্রাচীন এ গাছটি দেখতে পাওয়া যায় গাজীপুর রাজবাড়ি, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, নটরডেম কলেজ ক্যাম্পাস, রমনা পার্ক, বলধা গার্ডেন ও বরিশালে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেও আছে একটি গাছ। কার্জন হলের বাগানে আছে ২টি গাছ। গুলিস্তান পার্কে আছে ২টি গাছ। গুলিস্তান পার্কের একটি গাছে ফল হয়। বাকিগুলো ফুলের সৌন্দর্য ছড়িয়েই ক্ষান্ত থাকে। হোটেল রূপসী বাংলার পাশে, ফুলার রোডের মাথায় যেখানে ফোয়ারা আছে সেখানে ছিল একটি প্রাচীন নাগলিঙ্গম গাছ। ফোয়ারা তৈরি করতে গিয়ে গাছটি কাটা পড়ে।
নাগলিঙ্গম নাগলিঙ্গম Reviewed by রেজওয়ান on 8:59 AM Rating: 5

2 comments:

  1. ময়মনসিংহ শশীলজ, যেটি এখন মহিলা টিসার্স ট্রেইনিং কলেজ, সেখানে পুকুর পাড়ে রয়েছে দু'টি গাছ।

    ReplyDelete
    Replies
    1. ময়মনসিংহের মহিলা টিচার্স ট্রেনিং কলেজের তথা বিখ্যাত জমিদার শশীকান্ত মহারাজ বাড়ির পুকুর পাড়ে পিছনের দিকে সীমানা ঘেষে দু'টি বৃহৎ নাগলিঙ্গম গাছ আছে।

      Delete

Powered by Blogger.