তালের পুরুষ ও স্ত্রীফুল গুলো আলাদা আলাদা উদ্ভিদে জন্মে। পুরুষ ফুলগুলো সাদা পাকানো দড়ির মত দেখতে পুষ্পিত মজ্ঞরীতে দেখা যায়। শুকিয়ে গেলে মজ্ঞরীটি কালো রঙ ধারন করে। কচি অবস্থায় ফল গুলো তিনটি খাঁজ থাকে যা পরিনত হ্ওয়ার সাথে সাথে গোলাকার বা ডিম্বাকাকৃতি হয়, ১২-১৫ সে.মি. চ্ওড়া।
বৃতিগুলো ফলের মাথায় টুপির ন্যায় যুক্ত থাকে। যখন ফলগুলো কচি থাকে তখন তালের শাঁস নরম জেলীর মত,আংশিক স্বচ্ছ বরফের মত দেখায়, যা খেতে রসালো ও মিষ্টি। প্রতিটি ফলে সাধারনত তিনটি বীজ হয়।
তালের রস তালের পুষ্পমজ্ঞরীর অগ্রভাগ কেটে সংগ্রহ করা হয় যা দারুন মিষ্টি।তালের রস খুব সহজে ফার্মেন্টেড হয়ে যায় এজন্য রস সংগ্রহের পাত্রের ভিতরে চুনের প্রলেপ দেওয়া হয় যা গাঁজন প্রক্রিয়া প্রতিহত করে। তালের রস জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরী করা হয়,যা খুবই মিষ্টি ও পুষ্টিকর।
তালগাছ বড় ও লম্বা ধরণের ৩০ মিটার লম্বা হতে পারে এবং এর বেড় ১.৭ মিটার পর্যন্ত হয়। এর ২৫-৪০টি পাতা হয়ে থাকে। পাতা চামড়ার মত কঠিন,ধুসর সবুজ,পাখার মত দেখতে, ১-৩ মিটার চ্ওড়া, মধ্যশিরা বরাবর খাঁজ যুক্ত, এরকম ৬০-৮০ খাঁজ একটি পাতায় থাকতে পারে, পত্রকের অগ্রভাগ কাঁটা যুক্ত।
পাতার ডাঁটা শক্ত, ১-১.২ মিটার লম্বা, ও দুপাশে শক্ত কঁরাতের ন্যায় কাটা বিদ্যমান। অনেক জায়গায় এটি বাতাস বা ঝড় প্রতিরোধক হিসেবে লাগানো হয়। তালগাছ পাখিদের, বাদুড় বা চামচিকার ও অন্যান্য প্রানীর প্রাকৃতিক ও নিরাপদ আশ্রয়।
বাবুই পাখির বাসা তালগাছে হতে দেখা যায়।
তাল গাছ চিরে যে নৌযান বানানো হয় তার নাম ডোঙা, গ্রামীন জনপদের বর্ষাকালীন এক উপকারী নৌযান এটি। শাপলা তুলতে, মাছ ধরতে, পন্য বা অন্যান্য মালামাল পরিবহনে এটা দারুন দরকারী।
তালের পাতা দিয়ে হাতপাখা তৈরী করা হয়। তালের পাতার ডাটা থেকে এক ধরনের আঁশ সংগ্রহ করা হয় যা দিয়ে দড়ি তৈরী করা হয়, এটি সহজে পানিতে পচে না।
পরিপক্ক তালের নির্যাস দিয়ে বিভিন্ন ধরনের পিঠা তৈরী করা হয়। তালের বীজ অংকুরিত হলে এর ভিতরে এক ধরনের শাঁস তৈরীহয় যা খেতে চমৎকার। এছাড়াও তাল গাছের বিভিন্ন অংশদিয়ে বিভিন্ন হ্যান্ডিক্রাফটস তৈরী করা হয়। তালের কাঠ দিয়ে ঘরবাড়ী ও আসবাব তৈরী করা হয়।
পুরাতন অনেক পুঁথি সাহিত্য, চিত্র ইত্যাদি তালপাতায় রচিত হয়েছে।
অনেক সাহিত্য ও সংগীত ও রচিত হয়েছে এই গাছকে ঘিরে, যেমন”তালগাছ একপায়ে দাঁড়িয়ে, সবগাছ ছাড়িয়ে, উঁকি মারে আকাশে....”
অথবা এই গানটা, ”আমি মেলা থেকে তালপাতার এক বাঁশি কিনে এনেছি..”
অথবা এই গানটা, ” তোমার হাতপাখার বাতাসে, প্রান জুড়িয়ে আসে..”
এ সবই বাংলা সংগীত ও সাহিত্য জগতকে সমৃদ্ধ করেছে......
তালের অন্যান্য নাম:
•English: Borassus, Palmyra Palm, African fan palm, borassus palm, doub palm, great fan palm, lontar palm, ron palm, tala palm, tal-palm, toddy palm, wine palm
• Hindi: ताड़ Taad, ताल Tal, त्रृणराज Trinaraaj
• Marathi: ताड taad
• Tamil: தாலம் talam
• Malayalam: കരിമ്പന karimpana
• Telugu: తాటి చెట్టు tatichettu
• Kannada: ಓಲೆಗರಿ olegari, ತಾಳೆಗರಿ taalegari, ತಾಟಿನಿಮ್ಗು taatinimgu
• Bengali: তাল taala
• Konkani: इरोळ eroal
• Urdu: تاڙ taad
• Gujarati: તાડ taad
• Sanskrit: तालः taalah
বৈ্জ্ঞানিক নাম: Borassus flabellifer
গোত্র: Arecaceae
তাল
Reviewed by রেজওয়ান
on
8:54 AM
Rating:
No comments: