চেরি

সারা পৃথিবীতে অসংখ্য জাতের চেরি পাওয়া যায়। শুধু পৃথিবীর উত্তরাঞ্চলেই সংখ্যাটি প্রায় ৪৫০। ব্যাপকতার কারণে এই গণে গুল্ম থেকে শুরু করে উঁচু বৃক্ষও রয়েছে। তবে গাছ সর্বোচ্চ ৩০ মিটারের মতো উঁচু হতে পারে। সেই সঙ্গে ফুলের অসংখ্য রকমফেরও চোখধাঁধানো। মূলত ফুল, ফল ও আলংকারিক শোভাই এই গাছের জনপ্রিয়তার প্রধান কারণ। এরা পিচ ও এপ্রিকট ফলের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়। জাপানে চেরি ফুলের স্থানীয় নাম ‘সাকুরা’ (জাকুরা)। প্রজাতিভেদে চিরসবুজ ও পত্রমোচি—দুই ধরনের গাছ দেখা যায়। Prunus cerasoides জাতের গাছ হিমালয় অঞ্চলের বুনো চেরি হিসেবেই পরিচিত। চীন, মিয়ানমার ও ভারতে এই জাতের গাছ সহজলভ্য।
চেরি (Prunus spp) গাছের কাণ্ড অসমান, ডালপালা বিক্ষিপ্ত ও নোয়ানো স্বভাবের। পাতা সবুজ, লম্ব আয়তকার, ১০ সেন্টিমিটার বা ততোধিক অথবা বিচিত্র গড়নের, কিছু জাতের পাতা দেখতে অনেকটা পাটপাতার মতো, শিরা স্পষ্ট, কিনারা দাঁতানো, কোনো কোনোটি বিপ্রতীপভাবে বিন্যস্ত। প্রস্ফুটন মৌসুমে অনেকটাই পত্রহীন। গুচ্ছবদ্ধ ফুলগুলো প্রধানত গোলাপি, সাদা ও লালচে। পাপড়ি ও ফুলের গড়ন বিচিত্র। অসমান পাপড়িসংখ্যা সাধারণত পাঁচ, মাঝখানে সোনালি একগুচ্ছ মুক্ত পুংকেশর। সারা বিশ্বে এদের কিছু জাত ফুল ও কিছু জাত ফলের জন্য বিখ্যাত।
জাপানে মার্চের শেষ ভাগ থেকে এপ্রিলজুড়ে সেখানকার ঐতিহ্যবাহী চেরি উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। চেরি ফুলকে বরণ করে নেওয়ার এই অনুষ্ঠানের স্থানীয় নাম ‘হানামি’। ধারণা করা হয়, ৭১০ সাল থেকে জাপানে চেরি উৎসব শুরু হয়েছে।
আমাদের দেশে অনেকেই ‘ক্রেব’ বা ‘ফুরুস’ (Lagerstroemia indica) ফুলকে ভুলবশত চেরি ফুল নামে ডাকে। আদতে চেরি ফুলের সঙ্গে এই গাছের কোনো সম্পর্ক নেই।
চেরি চেরি Reviewed by রেজওয়ান on 8:07 AM Rating: 5

No comments:

Powered by Blogger.