লালসোনাইল

লালসোনাইলের ফুল, পাতা ও গাছের গড়ন বেশ নান্দনিক। অল্প বয়সী গাছগুলো দেখতে ছাতার মতো। উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে এদের বীথি বেশ দর্শনীয় হয়ে ওঠে। তা ছাড়া কচি পাতার সঙ্গে গুচ্ছবদ্ধ ফুলের প্রাণবন্ত উপস্থিতিও দারুণ উপভোগ্য। ঢাকার হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে লালসোনাইলের একটি সুদর্শন বীথি চোখে পড়ে। চন্দ্রিমা উদ্যানে লেকের ধারেও একটি সুদৃশ্য বীথি আছে। বিক্ষিপ্তভাবে আরও কয়েকটি আছে রমনা উদ্যান ও পূর্ত ভবন প্রাঙ্গণে।
সোনালু, সোনাইল বা বান্দরলাঠি আমরা যতটা চিনি, ঠিক ততটাই অচেনা লালসোনাইল। এর অবশ্য একাধিক কারণ আছে। এদের পোশাকি নাম পিংক ক্যাশিয়া বা পিংক শাওয়ার। বৈজ্ঞানিক নাম ক্যাশিয়া জাভানিকা (Cassia javanica. Syn. C nodosa)। জাভা দ্বীপপুঞ্জের এই উদ্ভিদের এত দিন কোনো বাংলা নাম ছিল না। এই ফুল নিয়ে কিছু মনগড়া নাম তৈরি হয়েছে। কোথাও কোথাও নাম ‘মে ফ্লাওয়ার’। অর্থাৎ মে মাসে ফোটে বলেই এমন নামকরণ! লালসোনাইল নাম রাখেন অধ্যাপক দ্বিজেন শর্মা। আকৃতির দিক থেকে এরা সোনাইলের মতো, তবে রঙ গোলাপি বা কোমল লাল।
লালসোনাইলের বিস্তৃতি পূর্ব ভারত থেকে মিয়ানমার হয়ে ইন্দোনেশিয়া পর্যন্ত। গাছ দ্রুত বর্ধনশীল, মাঝারি আকৃতির, ১০ মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে। মাথা ছড়ানো, পত্রমোচী, যৌগপত্র এক-পক্ষল, ১৫ থেকে ৩০ সেমি লম্বা, পত্রিকা ১৬ থেকে ২৮টি, মসৃণ ও ৩ থেকে ৫ সেমি লম্বা। শীতকাল পাতা ঝরার মৌসুম। গ্রীষ্মের শুরুতে কচি পাতার সঙ্গে গোলাপি রঙের ফুলের ছোট ছোট খাড়া থোকায় ভরে ওঠে গাছ। ফুল প্রায় ৩ সেমি চওড়া, সুগন্ধি, পাপড়ি ও পুংকেশর অসমান। বাসি ও তাজা ফুল মিলে চমৎকার বর্ণবৈচিত্র্য তৈরি করে। ফল গোলাকার, লম্বা, গাঢ়-ধূসর ও শক্ত। বংশ বৃদ্ধি বীজের মাধ্যমে।
লালসোনাইল লালসোনাইল Reviewed by রেজওয়ান on 12:30 PM Rating: 5

No comments:

Powered by Blogger.