আমলকী

দামে সস্তা হলেও আমলকি আমাদের দেশের শ্রেষ্ঠ ফলগুলোর মধ্যে একটি। আমলকি খেলে অনেক রোগের হাত থেকে নিষ্কৃতি পাওয়া যায় বা অনেক রোগ সেরে যায়। এ ফলের গুণাগুণ অমৃত সমান তাই একে অমৃতফল বলা হয়ে থাকে।
আমলকীর রয়েছে প্রচুর ঔষধি গুণ। এর রস যকৃৎ ও পেটের পীড়া, হাঁপানি, কাশি, বহুমূত্র, অজীর্ণ ও জ্বর নিরাময়ে বিশেষ উপকারী। আমলকীর পাতার রস আমাশয় প্রতিষেধক ও বলকারক। আমলকীর রসের শরবত জন্ডিস, বদহজম ও কাশির জন্য হিতকর। হাঁপানি, কাশি বহুমূত্র ও জ্বর নিরাময়ে আমলকীর বীজ ব্যবহার করা যায়।
চর্মরোগের চিকিৎসায় আমলকীর ফল ব্যবহৃত হয়। আধাচুর্ণ শুষ্ক আমলকী ৫ থেকে ৬ গ্রাম নিয়ে এক কাপ পানিতে মিশিয়ে এক ঘণ্টা ভিজিয়ে রেখে ভালোভাবে কচলিয়ে ছেঁকে পানিটুকু প্রতিদিন তিন-চারবার খেলে হজমশক্তি বাড়ে ও বমিভাব দূর হয়। দুই থেকে তিন চা-চামচ কাঁচা আমলকীর রস প্রতিদিন দুবার চিনি বা মধুসহ সেবন করলে ভিটামিন বি ও সির অভাব দূর হয়। কাঁচা বা শুকনো আমলকী বেটে দুধ ও মাখনসহ মিশিয়ে মাথায় লাগালে তাড়াতাড়ি ঘুম আসে।

পরিচর্যায় মায়ের মতো উপকারী তাই একে ধাত্রীফলও বলা হয়। আমলকিতে পেয়ারার চেয়ে আড়াই গুণ, লেবুর চেয়ে সাড়ে চার গুণ, আমের চেয়ে ১০ গুণ, কমলার চেয়ে ১১ গুণ, আমড়ার চেয়ে পাঁচ গুণসহ সব ফলের চেয়ে দ্বিগুণ থেকে ১০০ গুণ বেশি ভিটামনি সি থাকে। 

প্রতিদিন মাত্র একটি আমলকি খেয়ে আমাদের প্রতিদিনের ভিটামিন সি-এর চাহিদা পূরণ করতে পারি। গাছ থেকে সংগ্রহের পর থেকে ধীরে ধীরে এর ভিটামিন সি নষ্ট হতে থাকে। তাই আমলকি অবশ্যই তাজা খেতে হবে। আমলকি শরীর ঠাণ্ডা রাখে, রক্ত, মাংস ও হাড়ের গঠনে ভূমিকা রাখে। শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ, পায়খানা স্বাভাবিক রাখা ও পুরুষের দেহে বীর্য বর্ধক হিসেবে কাজ করে। চোখের জন্যও আমলকি বিশেষভাবে উপকারী। প্রতি ১০০ গ্রাম আমলকিতে আছে পানি ৯১.৪ গ্রাম, খনিজ ০.৭ গ্রাম, প্রোটিন ০.৯ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ৩৪.০ মিগ্রা, আয়রণ ১.২ মিগ্রা, ভিটামিন বি১-১০.০২ মিগ্রা, ভিটামিন বি২-২০.০৮ মিগ্রা, ভিটামিন সি ৪৬৩ মিগ্রা।
আমলকী আমলকী Reviewed by রেজওয়ান on 2:13 PM Rating: 5

No comments:

Powered by Blogger.