গোলাপ


সাদা গোলাপ
গোলাপ এক প্রকারের গুল্ম জাতীয় Rosaceae পরিবারের Rosa গোত্রের কাঁটা যুক্ত কান্ড বিশিষ্ট গাছের ফুল।এর পাতার কিনারাতেও ক্ষুদ্র কাঁটা রয়েছে। গোলাপের আদি নিবাস এশিয়া মহাদেশে। অল্প কিছু প্রজাতির আদি বাস ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা, ও উত্তরপশ্চিম আফ্রিকা মহাদেশে।

লাল গোলাপ
ফুলের রানী গোলাপের সৌন্দর্য ও সুবাসের জন্য চাহিদা রয়েছে সারা বিশ্বজুড়ে| ফুলের জগতে বর্ণ-গন্ধ আভিজাত্যে এর সমাদরই সব চেয়ে বেশী|রোম সম্রাট নিরো আর মিসরের সুন্দরী ক্লিওপেট্রারও প্রিয় ছিল গোলাপ। নিরো তাঁর প্রাসাদের এমন কোনো জায়গা ছিল না যেখানে গোলাপগাছকে ঠাঁই দেননি। ঘরের মেঝেতে গোলাপের পাপড়ি ছিটিয়ে রাখতেন সারাক্ষণ, গোলাপের সুরভি নেওয়ার জন্য। অতিথি মার্ক অ্যান্টনির আগমনে মিসরের রানি ক্লিওপেট্রা তাঁকে তাঁর হাঁটু পর্যন্ত গোলাপ বিছিয়ে দিয়ে অভিবাদন জানিয়েছিলেন। সেসব আজ অলীক কল্পনার মতোই।

গাঢ় মেরুন গোলাপ
গোলাপের আছে অসংখ্য জাত। প্রায় ১০০ প্রজাতির বিভিন্ন বর্ণের গোলাপ ফুল রয়েছে। এর কোনোটা বুনো, ছোট ছোট প্রচুর ফুল ফোটে। কোনোটার ফুল অনেক বড়। এগুলো হাইব্রিড ‘ট্রি’ শ্রেণীর। কোনোটার গাছ লতানো, কোনোটার ঝোপালো। শীতে ফোটার জন্য আশপাশের নার্সারিতে গোলাপি(গ্ল্যাডিয়েটর), গাঢ় গোলাপি(ফাস্টরেড), লাল(খৃশ্চান ডিয়ার), মেরুন(মন্টেজুমা), খয়েরি, ঘিয়া, হলুদ, সাদা, দুইরঙা, মিশ্রবর্ণা অনেক রকমের গোলাপ পাবেন। যেহেতু গোলাপ ফোটে শীতকালে তাই তীব্র শীতে অনেক সময় এদের বর্ণ খয়েরী বা কালো হয়ে যায়।

বুনো গোলাপ

খয়েরী গোলাপ
কলম গোলাপ টবেই লাগানো যায়।টবের জন্য ছোট গাছবিশিষ্ট মিনিয়েচার শ্রেণীর গোলাপই ভালো। এতে চাষ ও যত্ন করতে সুবিধা হয়, প্রদর্শনীতেও নেওয়া যায় সহজে। এসব শ্রেণীর গোলাপ কলম লাগানোর জন্য বড় টবের দরকার নেই, আট থেকে ১০ ইঞ্চি মুখের টব হলেই চলবে। কিন্তু হাইব্রিড টি এবং ফ্লোরিবানদা শ্রেণীর গোলাপের জন্য চাই বড় মুখের টব, যার মুখের ব্যাস ১২ ইঞ্চি বা তার বেশি। মাটির টবই ভালো।

মিনিয়েচার গোলাপ
গোলাপের জন্য সার-মাটি অন্য ফুলের মতো নয়, একটু আলাদা। মাটি তৈরির আগে সার জোগাড় করতে হবে। পচা গোবর বা প্যাকেটজাত জৈব সার, কাঠের ছাই, পাতা পচা সার বা পচা আবর্জনা সার অথবা ফেলে দেওয়া চায়ের পাতি টবের মাটিতে মেশানো যেতে পারে। খৈল দেওয়া যায়, তবে খৈল দিলে পিপড়ার উপদ্রব হতে পারে, ওরা শিকড় নষ্ট করে দেয়। তিনভাগ দো-আঁশ মাটির সঙ্গে একভাগ জৈব সার ও একভাগ কাঠের ছাই মিশিয়ে টবের জন্য সার-মাটি তৈরি করতে পারেন। টবে কোনো রাসায়নিক সার দেওয়ার দরকার নেই। জমির গর্তে লাগানোর অন্তত ১০ দিন আগে জৈব সারের সঙ্গে দুই-তিন চাচামচ করে টিএসপি ও এমপি সার মিশিয়ে দিতে পারেন।

বেগুনি গোলাপ
টবের ঠিক মাঝখানে গোলাপের কলম লাগিয়ে হালকা সেচ দেবেন। লাগানোর পর টবসমেত গাছটিকে দিনকয়েক ছায়ায় রাখতে হবে। এ সময় কিছু পাতা ঝরিয়ে দিতে পারেন। এতে কলম দ্রুত বেঁচে উঠবে। নতুন পাতা ছেড়ে গাছ বাড়তে শুরু করলে রোদে বের করে দিতে পারেন। শীত শেষে যখন গাছে নতুন ডালপালা গজানো শুরু করবে, সে সময় অল্প করে ইউরিয়া সার (এক চিমটি সার প্রতি লিটার পানিতে গুলে) গাছের গোড়ায় দিতে পারেন। এতে গাছ দেখতে ভালো হবে, বাড়বে ভালো। তবে সার বেশি হলে ক্ষতি হবে। আজকাল বাজারে বিভিন্ন রকমের ট্যাবলেট সার পাওয়া যাচ্ছে। দুটি সার বড়ি কিনে গাছের গোড়ার মাটিতে দুই ইঞ্চি গভীরে পুঁতে দিতে পারেন। এটা দিলে এক বছরের মধ্যে আর কোনো সার দিতে হবে না। মাঝেমধ্যে অল্প করে চায়ের পচা পাতি টবের ওপরের মাটি হালকা করে নিড়িয়ে তার সঙ্গে মিশিয়ে দিতে পারেন। টবের মাটি যাতে একবারে শুকিয়ে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখবেন। নিয়মিত সেচ দেবেন। বেয়াড়া ডালপালা অবশ্যই ছেঁটে দেবেন। জুন আর সেপ্টেম্বরে গোলাপগাছ ছাঁটতে পারেন। না হলে ভালো ফুল ফুটবে না। দুই-তিন বছর পর টবের মাটি পুরো বদলে দেবেন। পুরোনো মাটি রাখলে তাতে ফুল ভালো হবে না। তবে আমার পরামর্শ হলো—একঘেয়েমি কাটাতে শুধু মাটি বদল নয়, নতুন জাতের অন্য গোলাপের কলম এনে লাগাতে পারেন। ঠান্ডা কমে এলে ফেব্রুয়ারি থেকেই গোলাপ বাগানের কাজ শুরু করতে পারেন। তবে বর্ষাকালের আগে লাগানো ভালো। ওই সব গাছে আগামী শীতজুড়ে প্রচুর ফুল ফুটবে।

মিশ্রবর্ণা গোলাপ
গোলাপের খোঁজ
কৃষিবিদ উপকরণ নার্সারি, কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট চত্ব্বর, ফার্মগেট, ঢাকা। ফোন: ০১৮৯১৯৪৩০৩।
ভোসড নার্সারি, গ্রিনফিঙ্গার নার্সারি, এগ্রিটেক, কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট চত্বর, ফার্মগেট, ঢাকা।
ডালিয়া নার্সারি, কেডিএ আউটার বাইপাস রোড, সোনাডাঙ্গা, খুলনা। ফোন: ০১৭১৪০৫৭৭৮৩
রাঙাবন নার্সারি, সাভার বাসস্ট্যান্ড, সাভার, ঢাকা।

হলুদ গোলাপ
গোলাপের চাহিদার কারণে একে বাণিজ্যিকভাবেও চাষাবাদ করা হয়।আতর শিল্পেও রয়েছে এর বহুল ব্যবহার। ঢাকার খুব কাছেই সাভারের তুরাগ নদীর তীরে সাদুল্লাপুরে হয় গোলাপের বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ।
তথ্য সংগ্রহঃ প্রথম আলো, উইকিপিডিয়া
গোলাপ গোলাপ Reviewed by রেজওয়ান on 4:04 PM Rating: 5

No comments:

Powered by Blogger.